গণমাধ্যম না গোত্রমাধ্যম!

পক্ষপাত সব ক্ষেত্রেই দোষণীয়। ন্যায়ানুগতা কিংবা ভারসাম্যের পথ ছেড়ে দেয়ার মানেই হল জুলুম। অন্যায় ও অবিচারের দুষ্ট পথ উন্মোচন। এ যে কেবল বিচার-আচারের বিষয়েই সীমাবদ্ধ তা ঠিক নয়। বরং বহু ক্ষেত্রেই এটি ঘটতে পারে। আর এ ধরনের অন্যায়ের মারাত্মক একটি জাতীয় বিষয় হচ্ছে গণমাধ্যমে পক্ষপাতিত্ব। পত্র-পত্রিকাটিভি-চ্যানেলঅনলাইন নিউজ পোর্টাল কিংবা রেডিও সবকিছুই গণমাধ্যমের আওতাভুক্ত। সরল ভাষায় সাংবাদিকতা বলতে গণমাধ্যমের কাজকর্মকেই বুঝানো হয়ে থাকে।
এই গণমাধ্যম বা মিডিয়াকে বলা হয়ে থাকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। আইন বিভাগ (সংবিধান-সংসদ)বিচার বিভাগ ও শাসন বা নির্বাহী বিভাগের পরই এর অবস্থান। এজন্য গণমাধ্যমে পক্ষপাত বা অবিচার কোনো অবস্থাতেই লঘু বা হাল্কা কোনো বিষয় হতে পারে না। এর ক্ষতি ও বিপর্যয়কে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। গত দুই যুগের বাংলাদেশে অব্যাহতভাবে চলা সেই অবিচারেরই বিষময় ফল এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে। কেবল দৃশ্যমানই নয়অনেক ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাবসৃষ্টিকারী ও নীতিনির্ধারকের অবস্থান গ্রহণ করেছে। একারণেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বোধ-বিশ্বাস ও স্বার্থের সঙ্গে গণমাধ্যমের তৈরি করা কুহকের সংঘর্ষ দিন দিন বেড়েই চলেছে। যেটা না হওয়াই উচিত ছিল।
ধর্মপ্রাণ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনের ভেতরের অভিযোগ হচ্ছেএদেশের সিংহভাগ গণমাধ্যম বিভিন্ন স্পর্শকাতর ইস্যু ও দৃষ্টিভঙ্গিতে তাদের বিপক্ষে ভূমিকা রেখে থাকে। যেমন : ইসলামী শিক্ষাইসলামের বিধান (ফতোয়া)ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক প্রয়াসইসলামী দাওয়াহইসলামী পোশাক  (বোরকা-হিজাব)ইসলামী আচার-আচরনইসলামী উম্মাহর কোনো ঘটনাইসলামী দেশ ও জাতির কোনো ইস্যুইসলামী সংস্কৃতি ও জীবনধারাইসলাম বিরোধীদের তৎপরতা ইত্যাদি। এসব ইস্যু এবং এ-জাতীয় আরো ইস্যুর ক্ষেত্রে একশ্রেণীর প্রভাবশালী গণমাধ্যমের কাজকর্মগুলো প্রায় পুরোপুরিই প্রবাহিত হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ মানুষের চিন্তা-চেতনার বিরুদ্ধে। কিন্তু এ কথাগুলোর প্রতি ওইসব গণমাধ্যম কর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা পাত্তাই দিতে চান না। কোটি কোটি বিশ্বাসী মানুষের আত্মা ও মগজে বিষ ছড়ানোর দায় এবং তাদের ঠকানো ও বঞ্চিত করার প্রয়াসগুলো যেন তাদের কাছে অতি তুচ্ছ ব্যাপার। এটা যেন নিছক দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতার বিষয়আর কিছুই নয়। উল্টো তারা গম্ভীর স্বরে বলে থাকেন কখনো কখনো গণমাধ্যমগুলো তো মিথ্যা কিছুই বলছে না। যা দেখছেযা শুনছে তা-ই তুলে ধরছে। র্অথাৎ তারা বলতে চাইছেনওইসব গণমাধ্যম সত্য তথ্য দিয়েই দায়িত্ব পালন করে থাকে। মিথ্যার কোনো ব্যাপার সেখানে ঘটে না। বাস্তবে তাদের এই অবস্থান কতটা সঠিকএ যুক্তিতে তারা নিজেদের কতটা অবিচারমুক্ত প্রমাণের অধিকার লাভ করতে পারেনক্ষুদ্র পরিসরে তলিয়ে দেখলেও এ দাবির অসারতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
। দুই।
ব্যাপক অভিযোগ এটাই যেধর্মপ্রাণ মানুষের ইস্যুতে তারা যে কোনো পরিবেশনায় ইচ্ছাকৃত ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে থাকে। কোনো ঘটনা যদি সত্যিই ঘটে থাকেতবুও দেখা যায় ঘটনাটি মন্দ হলে আর তার সঙ্গে ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনসংখ্যার কোনো সম্পর্ক থাকলে সেটিকে ফলাও প্রচার দেওয়া হয়। বার বার ফলোআপ করা হয়। বিশাল-ব্যাপক ইস্যুতে পরিণত করা হয়। তর্ক-বিষোদ্গারঘৃণা এবং নেতিবাচক দাবি-দাওয়া পর্যন্ত গড়িয়ে তবে বিষয়টি সমাপ্ত করা হয়। অপরদিকে ঘটনাটি ভালো ও কল্যাণকর হলে আর সেটি কোনো ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কাজ হলে অতি ছোট্ট একটি খবর’ দিয়েই সেরে ফেলা হয় দায়িত্ব। পক্ষান্তরে ঘটনার সঙ্গে ইসলামবিরোধী মহলের সম্পর্ক থাকলেভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের যোগসূত্র পাওয়া গেলে কিংবা রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক পর্যায়ে ইসলামী বিধি-বিধানের উল্টোস্রোতের ব্যক্তিদের সম্বন্ধ থাকলে এরাই খবরের ট্রিটমেন্ট (পরিবেশনার ধরণ) সম্পূর্ণ উল্টে দেয়। বড় করার মতো খবরটিকে ছোট করে ছাড়ে আর ছোট হওয়ার মতো খবরকে পাঁচ-সাত কলামে মাতিয়ে তুলে।
এখানে হয়তো স্পষ্ট সত্য-মিথ্যার’ কোনো ব্যাপার থাকে না। কিন্তু আকাশ-পাতালের’ ব্যাপার থাকে। তিলকে তাল’ বানানো আর তালকে তিল’ করে দেখানোর কসরতটা একদম প্রকাশ্য হয়ে ওঠে। আর এভাবেই ভারসাম্যহীনতার একটি দুধারা চাবুক দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম মানুষ ও মানসের বোধ ও স্বার্থকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়ে থাকে। গত দুই যুগে এই দেশে এ ব্যাপারটিই বিপুলভাবে ঘটেছে। কেবল সত্য কিংবা মিথ্যা নয়সত্য ও মিথ্যার মিশ্রণেও একটি মিশ্রমত’ গড়ে তোলার কাজটি করেছে প্রবাভশালী গণমাধ্যম। যে কারণে গণমাধ্যমের ন্যায়ানুগ ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যে কারণে গণমাধ্যমের প্রতি অবিচারের অভিযোগ কোটি কোটি হৃদয়ে জেগে ওঠেছে। ইসলামী শিক্ষাঅনুশাসন ও আদর্শ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানা প্রশ্ন উঠানো হলেও দেখা যায়অন্য কোনো কোনো ধর্ম-গোত্র ও মহলের কুসংস্কার ও প্রকাশ্য দুরাচারের প্রতিও সহানুভূতিপ্রবণ হয়ে থাকছে একশ্রেণীর গণমাধ্যম। এ জন্যই অবিচার ও ন্যায়হীনতার অনুযোগ-অভিযোগের দীর্ঘশ্বাস শোনা যাচ্ছে চারদিকে।
খবর ছোট-বড় করা ছাড়া গণমাধ্যমের অবিচারের আরেকটি বড় বিষয় হচ্ছে পরবর্তী দিনগুলোতে খবরটির ফলোআপ (আরো জের) প্রকাশ বা সম্প্রচার করা বা না-করা। এক্ষেত্রেও তিলকে তাল’ বা তালকে তিল’ বানানোর ঘটনা ঘটানো হয়ে থাকে। এটিও দায়িত্বের দিক থেকে কোনো গণমাধ্যমের জন্য একটি বড় জুলুম। এর বাইরে আরেকটি বিষয় যেটি ঘটেসেটি হচ্ছে সম্পাদকীয় মতামতের ক্ষেত্রেকলামধর্মী লেখায় এবং বিভিন্ন ফিচার ও অনুষ্ঠানে ওই বিষয়টিকেই টেনে নিয়ে আসা বা না-আসার একটি গেম’ তৈরি করা। একটি ছোট্ট বিতর্কমূলক ঘটনা (ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মাঝের) যেটি একদিনই ঘটেছেসেটির প্রচার-বিশ্লেষণে মাসখানেক বরাদ্দ করা এবং পরিবেশ বিষিয়ে তোলা। গণমাধ্যমের এরকম আচরণের নজির বহু। তেতুলের তুলনা’ বিষয়ক বক্তব্য নিয়ে তাদের মাতামাতি দেখলেই ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে। অপরদিকে আপনি কালোবিড়াল’ খ্যাত একজন সংখ্যালঘু রাজনীতিকের ঘন ঘন চরম সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ও বালখিল্যতাপূর্ণ বক্তব্যের কথা ধরুন। হাবভাব দেখলে মনে হতে পারে গণমাধ্যম যেন তাকে পূজাই’ করছে। সে হিসেবে শুধু খবর (নিউজ) মাত্র নয়প্রভাবশালী গণমাধ্যম তার মতামতধর্মী আয়োজনেও এক ধরনের অবিচারমূলক স্বেচ্ছাচারিতা’ চালিয়ে যাচ্ছে। এ যেন মুসলিম-বৈরি’ গণমাধ্যম-চর্চার এক উন্মাদ মহড়া। এবং সেটি ঘটছে এ-দেশেই। নিজ দেশের বিনিয়োগ। নিজ দেশের সংবাদকর্মী। কিন্তু সুর উল্টোজনের। কথা ও ভাষাদাবি ও শ্লোগান বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার। সচেতন কিংবা অবচেতনভাবে। মুসলিম ধর্মাচারপার্বত্য চট্টগ্রামগ্যাস-বিদ্যুৎবন্দর এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আরাধনা-উৎসবে এদের ভমিকা দিন দিন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এ বিষয়গুলো এখন অনেকটাই ওপেনসিক্রেট। জানে এবং বুঝে সবাই। বলতে চায় না। গণমাধ্যমের সংঘবদ্ধ কোরাসের ভয় সবার মধ্যেই কাজ করে।
আরেকটি ব্যাপার হচ্ছেকৌশলী মিথ্যাচার। এটাও যে একদম ঘটে না এমন নয়। শব্দের প্রয়োগেতথ্যের মিশেলে এই অসত্যাচার প্রায়ই তৈরি করা হয়। খবরের সঙ্গে মতামত মিশিয়ে নির্দোষ বিষয়কেও জটিল অপরাধ কিংবা গ্লানি হিসেবে উপস্থিত করা হয়। আরেকটি বিষয় হচ্ছেঢালাওকরন করা। যে কোনো নেতিবাচক বিষয় নিয়েই ইসলামপ্রিয় সব মানুষকে ঢালাওভাবে অভিযুক্ত ও অপরাধী সাব্যস্ত করার মহড়া শুরু করে দেওয়া হয়। এটিও মারাত্মক অন্যায়। এসব বিষয়ের ভেতর-বাইর প্রায় সময়ই দেশের সচেতন মানুষ পুরোটা অনুভব করেন। এবং বেদনাও বোধ করেন। কিন্তু কলম ও ক্ষেত্র হাতে না থাকায় কিছু করে দেখাতে পারেন না।
। তিন।
কেউ কেউ বলেনমুসলিম বিরোধী আন্তর্জাতিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রচার ও গণমাধ্যমের ভাষা এক সময় এরকম  বৈপরিত্বপূর্ণ ছিল। এখন সেটিরই দেশীয়করণ করা হয়েছে। এ অর্থে মন-মগজ ও স্বার্থে পশ্চিমানুরক্ততা তৈরি হওয়ায় এদেশের গণমাধ্যমে স্বজাতি ও স্বধর্ম-বিরোধিতার এক স্বনিয়োজিত অধ্যায় চলছে বলা যায়। এতে নাকি এদেশের সংবাদকর্মীদের একটি অবসরপ্রাপ্ত’ কম্যুনিস্ট ও সেক্যুলারিস্ট অংশের মন ও পেশার মান রক্ষা হচ্ছে। কেউ কেউ বলেনপাশের দেশের সাংস্কৃতিক চেতনা ও গোয়েন্দাস্বার্থও এজাতীয় প্রবণতাকে উস্কে দিচ্ছে। প্রবল সাম্প্রদায়িক ও খুনে একটি শক্তির হাতে পাশের বড় ধর্মনিরপেক্ষ’ দেশের রাজত্ব। সে রাজত্ব’ নিয়ে কোনো মোসাহেবী নিন্দা’ করার সাহসও করে না এদেশের গণমাধ্যম। কিন্তু তারাই আবার এদেশের নিরীহ ধর্মপ্রাণ মুসলিমের বোধ-জীবনাচার ও শিক্ষা নিয়ে বিষোদ্গারের বন্যা ছুটিয়ে দেয়। আর এটাই হচ্ছে এদের বড় অবিচার। ন্যায়-বিরুদ্ধতা ও ভারসাম্যহীনতা। এরা একই ইস্যুতে মুসলিমদের গালি দেন। কিন্তু হিন্দুখ্রিস্টানবৌদ্ধদের পিঠে হাত রেখে পিঠচাপড়ানি দেন। এরা সাম্প্রদায়িকতার কথা কাদের বিরুদ্ধে বলেনযারা উপমহাদেশজুড়ে অপর ধর্মীয়দের সাম্প্রদায়িক আক্রমনে প্রায়ই নিহত’ হচ্ছেন। এরা কুসংস্কার’ নিয়ে মুসলিম জীবনাচারের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করেন। কিন্তু ভিন্ন ধর্মীয় অমানবিক কুসংস্কারকেও মানবিক ও সাংস্কৃতিক একটি আবহ দিয়ে প্রচার করেন। এটি গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে কোনো সুবিচার হতে পারে না। এবং এই অবিচার এখন আর উপেক্ষাযোগ্যও নয়। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলে কথা! ব্যাপক প্রভাবক এই রাষ্ট্রীয় স্তম্ভের অবিচার ও ন্যায়-বিরুদ্ধতা এখন এদেশের সভ্যতা ও ইতিহাসকেই যেন ঘুরিয়ে দিতে শুরু করেছে। সুতরাং গণ্যমাধ্যম ও সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি মানুষের মন ও বিবেকের কাছে আমরা আহŸান রাখবগণমাধ্যমের কোনো ব্যক্তিই যেন সভ্যতাধ্বংসীবিশ্বাসবিরোধী ও জাতিবিনাশী খুনীর হাতের দীর্ঘ মেয়াদী চাপাতি’ হিসেবে ব্যবহৃত না হই। এটা উচিত নয়। কারণএর নানামাত্রিক বিষফল গোটা সমাজকেই ধসিয়ে দিতে পারে।
একজন ইসলামী প্রাজ্ঞজন বলেছিলেন, ‘সাংবাদিকতা হচ্ছে কোনো জাতির নির্মাণ কিংবা ধ্বংসের গদ্য।’ সুতরাং গণমাধ্যমের চরিত্র বিশ্লেষণ করে আবারো এর নির্মাণক্ষমতা সজীব করে তোলা দরকার। বন্ধ করা দরকার এর ধ্বংসাত্মক উপাদান ও উপলক্ষ। গণমাধ্যম তো সব মানুষের কথা বলবেএজন্যই তো সেটি গণমাধ্যম। কিন্তু মতাদর্শিক অতীত অথবা পশ্চিমা প্রভাব কিংবা প্রতিবেশী দেশ ও ধর্মের খুদকুড়ার ঋণ যেন গণমাধ্যমকে গোত্রমাধ্যমে পরিণত না করে সে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি সবার। রাষ্ট্রের প্রভাবশালী এই স্তম্ভটির পাহারাদারিও তো দরকার। মানুষদেশ ও সভ্যতার প্রয়োজনেই দরকার। এমন তো নয় যে সেখানে যারা আছেন সবাই ফেরেশতা। তাদের নৈতিকতার কোনো ক্ষয়-লয় নেই। খেদ-ক্ষোভ কিংবা আনুগত্য-দাসত্বের ব্যাপার নেই। আইন-বিচার ও শাসন বিভাগের সামনে যদি জবাবদিহিতার কাঠগড়া থাকতে পারে তবে গণমাধ্যমের পথচ্যুতি’ কিংবা এজেন্ডাবাজি’ নিয়েও তো শৃঙ্খলার শেকল’ থাকা উচিত বলাই যেতে পারে।
। চার।
পথচ্যুত গণমাধ্যমের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কী কী করা যায়প্রথম পথ তো হচ্ছেগণমাধ্যম-সংশ্লিষ্ট সৎ ও সম্ভাবনাময় ব্যক্তিদের কাছে সত্য ও বাস্তবতাটি বারবার তুলে ধরা। গণমাধ্যমের তীব্র ও প্রকাশ্য অসঙ্গতিগুলো ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা। দ্বিতীয়তবিভিন্ন পরিসরে দেশের মানুষকেগণমাধ্যমের পাঠক-দর্শককে বাস্তবতার বিষয়গুলো তুলনা দিয়ে ব্যাখ্যা করে বুঝানোর উপায় চালু করা। এতে অনেক সুফল আসতে পারে। কারণ একশ্রেণীর গণমাধ্যমের পক্ষপাতমূলক ভমিকা বা অবিচার নিয়ে জনসাধারণের মাঝে এমনিতেই যথেষ্ট ক্ষোভ ও সচেতনতা সক্রিয় আছে। তৃতীয়ত যেটা করা যায় সেটি হলবিকল্প গণমাধ্যম-কর্মী তৈরি এবং ইতিবাচক গণমাধ্যম নির্মাণের পথে যাওয়া। এটিই স্থায়ী ও প্রভাবক পদ্ধতি। অবশ্য অবিচারের শিকার হয়ে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আইনী পদক্ষেপও নেয়া যেতে পারে। এই অবকাশও স্বীকৃত ও চর্চিত। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্ষমতা ও শক্তির কারণে বর্তমানে এর অন্যায়চর্চাও হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

ব্যাপার যা-ই হোকএকথা সত্য যে মানুষমানবতাবিশ্বাস ও নৈতিকতার সুস্থতার প্রয়োজনেই প্রয়োজন পক্ষপাতমুক্তইতিবাচক গণমাধ্যম। ঐতিহ্যবাদীশ্রদ্ধাপ্রবণশালীনতাসন্ধানী ও স্বাধীনতা রক্ষাকারী গণমাধ্যমের সাহায্যেই আমাদের দেশ সুস্থতার সঙ্গে আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। অন্য কোনোভাবে নয়। সবার লক্ষ রাখতে হবে গণমাধ্যম যেন  মাত্র একভাগ মানুষের উদ্ভট পক্ষপাত ও বিভাজন-বেয়াদবির বাহন না হয়ে উঠতে পারে। 

No comments:

Post a Comment

Popular Posts

একটু চিন্তা করুন ।

                      أعوذ بالله من الشيطان الرجيم                           بسم الله الرحمن الرحيم                 সকল মুসলিম ভাই বোন ক...

Search This Blog

Followers