স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর শোকপালনে বিধান কি?
স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর ইদ্দতকালীন সময় (অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত অন্যথায় ৪ মাস ১০ দিন) সব ধরণের সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব ।
সহীহ বুখারীতে উম্মে হাবীবা রা. থেকে বর্ণিত আছে,
أني سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول : لا يحل لامرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تحد على ميت فوق ثلاث إلا على زوج فإنها تحد عليه أربعة أشهر وعشرا (صحيح البخاري :2/803- باب حد المرأة على غير زوجها)
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী কোনো নারীর জন্য তার স্বামী ব্যতীত অন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশি সময় হিদাদ (শোক করা ও সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা) বৈধ নয়। আর স্বামীর মৃত্যুতে ৪ মাস ১০ দিন হিদাদ পালন করবে।(সহীহ বুখারী ২/৮০৩,হাদীস : ৫১২৮)
উম্মে সালামা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
عن النبي صلى الله عليه و سلم أنه قال ” المتوفى عنها زوجها لا تلبس المعصفر من الثياب ولا الممشقة ولا الحلي ولا تختضب ولا تكتحل (سنن أبي داود: 1/315 – باب فيما تجتنب المعتدة في عدتها)
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে স্ত্রী লোকের স্বামী মৃত্যুবরণ করে সে যেন ইদ্দতকালীন সময়ে রঙিন এবং কারুকার্যমণ্ডিত কাপড় ও অলংকার পরিধান না করে। আর সে যেন খিযাব ও সুরমা ব্যবহার না করে।(সুনানে আবু দাউদ ১/৩১৫,হাদীস : ২২৯৮)
আল্লামা কুরতুবী রাহ. তার বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘আলজামে লিআহকামিল কুরআন’ও ইদ্দত সংক্রান্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখেন,
الإحداد : ترك المرأة الزينة كلها من اللباس والطيب والحلي والكحل والخضاب بالحناء ما دامت في عدتها ؛ (الجامع لأحكام القرآن للقرطبي – 3 / 179)
হিদাদ পালনের অর্থ হল, মহিলা তার ইদ্দতকালীন সুগন্ধি, সুরমা, মেহেদি,অলঙ্কারাদিসহ পোশাক-আশাকের ক্ষেত্রে যাবতীয় সাজসজ্জা ত্যাগ করবে। (তাফফীরে কুরতুবী ৩/১৭৯)
সুতরাং কোনো মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পর ৪ মাস ১০ দিন অথবা অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত যে কোনো ধরণের সাজসজ্জা যা উৎসবাদিতে পরা হয় এমন চাকচিক্যপূর্ণ পোশাক পরিধান করা,সুগন্ধি ও অন্যান্য সাজসজ্জার প্রসাধনী ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। তদ্রুপ মেহেদি লাগানো, সুরমা দেওয়া থেকেও বিরত থাকা আবশ্যক। অবশ্য ব্যবহৃত রঙিন কাপড় যদি চাকচিক্যপূর্ণ না হয় তাহলে তা পরিধান করতে কোনো অসুবিধা নেই।
ইদ্দত অবস্থায় সাদা কাপড় পরা আবশ্যক নয়। বরং সাদা কাপড় পরিধান করাকে জরুরি মনে করা ঠিক নয়।
প্রকাশ থাকে যে,ইদ্দত অবস্থায় মহিলার জন্য সাজগোজ ত্যাগ করার বিধান একাধিক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এ ব্যাপারে হাদীসে অত্যন্ত গুরুত্ব এসেছে। এটি শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। সুতরাং একে সামাজিক প্রথা বা কুসংস্কার মনে করা অন্যায়। বরং আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী সকল মুসলমানের উচিত উক্ত বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। নারীদের কর্তব্য উক্ত বিধান পালনে যত্নশীল হওয়া।
ইদ্দত কালীন সময় যে সকল জিনিষ থেকে বিরত থাকবে
• সাজগোজ
• সুগন্ধি ব্যবহার
• রঙিনএবং কারুকার্যমণ্ডিত কাপড় পরিধান
• অলংকার পরিধান
• মেহেদিও আলতাব্যবহার
• খিযাব(কলপ) ও সুরমা ব্যবহার
• নেইল পালিশ, আইলেনার ইত্যাদি সজসজ্জার উপকরণ
প্রামাণ্য গ্রন্থাবলীঃ
১। সহীহ বুখারী ২/৮০৩,হাদীস : ৫১২৮
২। সুনানে আবু দাউদ ১/৩১৫,হাদীস : ২২৯৮
৩। তাফফীরে কুরতুবী ৩/১৭৯
৪। আলমাবসূতলিসসারাখসী ৬/৫৯
৫। আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৩০-৫৩২
৬। মিরকাতুল মাফাতীহ ৬/৪৫২
৭। তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/২৩১
৮। বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৩০
৯। আল বাহরুর রায়েক
১০। ফাতহুল বারী ৯/৪০১,৩৯৫।
আল্লাহ তাআলা সহীহ ভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন। (আমীন)
স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর ইদ্দতকালীন সময় (অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত অন্যথায় ৪ মাস ১০ দিন) সব ধরণের সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব ।
সহীহ বুখারীতে উম্মে হাবীবা রা. থেকে বর্ণিত আছে,
أني سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول : لا يحل لامرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تحد على ميت فوق ثلاث إلا على زوج فإنها تحد عليه أربعة أشهر وعشرا (صحيح البخاري :2/803- باب حد المرأة على غير زوجها)
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী কোনো নারীর জন্য তার স্বামী ব্যতীত অন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশি সময় হিদাদ (শোক করা ও সাজসজ্জা থেকে বিরত থাকা) বৈধ নয়। আর স্বামীর মৃত্যুতে ৪ মাস ১০ দিন হিদাদ পালন করবে।(সহীহ বুখারী ২/৮০৩,হাদীস : ৫১২৮)
উম্মে সালামা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
عن النبي صلى الله عليه و سلم أنه قال ” المتوفى عنها زوجها لا تلبس المعصفر من الثياب ولا الممشقة ولا الحلي ولا تختضب ولا تكتحل (سنن أبي داود: 1/315 – باب فيما تجتنب المعتدة في عدتها)
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে স্ত্রী লোকের স্বামী মৃত্যুবরণ করে সে যেন ইদ্দতকালীন সময়ে রঙিন এবং কারুকার্যমণ্ডিত কাপড় ও অলংকার পরিধান না করে। আর সে যেন খিযাব ও সুরমা ব্যবহার না করে।(সুনানে আবু দাউদ ১/৩১৫,হাদীস : ২২৯৮)
আল্লামা কুরতুবী রাহ. তার বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘আলজামে লিআহকামিল কুরআন’ও ইদ্দত সংক্রান্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখেন,
الإحداد : ترك المرأة الزينة كلها من اللباس والطيب والحلي والكحل والخضاب بالحناء ما دامت في عدتها ؛ (الجامع لأحكام القرآن للقرطبي – 3 / 179)
হিদাদ পালনের অর্থ হল, মহিলা তার ইদ্দতকালীন সুগন্ধি, সুরমা, মেহেদি,অলঙ্কারাদিসহ পোশাক-আশাকের ক্ষেত্রে যাবতীয় সাজসজ্জা ত্যাগ করবে। (তাফফীরে কুরতুবী ৩/১৭৯)
সুতরাং কোনো মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পর ৪ মাস ১০ দিন অথবা অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত যে কোনো ধরণের সাজসজ্জা যা উৎসবাদিতে পরা হয় এমন চাকচিক্যপূর্ণ পোশাক পরিধান করা,সুগন্ধি ও অন্যান্য সাজসজ্জার প্রসাধনী ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। তদ্রুপ মেহেদি লাগানো, সুরমা দেওয়া থেকেও বিরত থাকা আবশ্যক। অবশ্য ব্যবহৃত রঙিন কাপড় যদি চাকচিক্যপূর্ণ না হয় তাহলে তা পরিধান করতে কোনো অসুবিধা নেই।
ইদ্দত অবস্থায় সাদা কাপড় পরা আবশ্যক নয়। বরং সাদা কাপড় পরিধান করাকে জরুরি মনে করা ঠিক নয়।
প্রকাশ থাকে যে,ইদ্দত অবস্থায় মহিলার জন্য সাজগোজ ত্যাগ করার বিধান একাধিক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এ ব্যাপারে হাদীসে অত্যন্ত গুরুত্ব এসেছে। এটি শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। সুতরাং একে সামাজিক প্রথা বা কুসংস্কার মনে করা অন্যায়। বরং আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী সকল মুসলমানের উচিত উক্ত বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। নারীদের কর্তব্য উক্ত বিধান পালনে যত্নশীল হওয়া।
ইদ্দত কালীন সময় যে সকল জিনিষ থেকে বিরত থাকবে
• সাজগোজ
• সুগন্ধি ব্যবহার
• রঙিনএবং কারুকার্যমণ্ডিত কাপড় পরিধান
• অলংকার পরিধান
• মেহেদিও আলতাব্যবহার
• খিযাব(কলপ) ও সুরমা ব্যবহার
• নেইল পালিশ, আইলেনার ইত্যাদি সজসজ্জার উপকরণ
প্রামাণ্য গ্রন্থাবলীঃ
১। সহীহ বুখারী ২/৮০৩,হাদীস : ৫১২৮
২। সুনানে আবু দাউদ ১/৩১৫,হাদীস : ২২৯৮
৩। তাফফীরে কুরতুবী ৩/১৭৯
৪। আলমাবসূতলিসসারাখসী ৬/৫৯
৫। আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৩০-৫৩২
৬। মিরকাতুল মাফাতীহ ৬/৪৫২
৭। তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/২৩১
৮। বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৩০
৯। আল বাহরুর রায়েক
১০। ফাতহুল বারী ৯/৪০১,৩৯৫।
আল্লাহ তাআলা সহীহ ভাবে আমল করার তৌফিক দান করুন। (আমীন)
No comments:
Post a Comment