হযরত আনাস ইবন মালিক রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি ইরশাদ করেন, আমি নামায শুরু করি আর আমার ইচ্ছা থাকে তা দীর্ঘ করার। এ অবস্থায় যখন কোনও শিশুর কান্না শুনি, আমি নামায সংক্ষেপ করে ফেলি। কারণ আমি জানি, তার কান্নায় তার মায়ের কী কঠিন কষ্ট হয়। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭১০ কী বোঝা গেল এ হাদীস দ্বারা? এতটুকু কথা তো স্পষ্ট যে, নামায অবস্থায় কোনও শিশুর কান্না শুনতে পেলে তার মায়ের কষ্ট হয় বিবেচনা করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায সংক্ষেপ করে দিতেন। নামায ছিল প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বাপেক্ষা প্রিয় কাজ। তিনি ইরশাদ করেছেন, নামাযে আমার নয়ন জুড়ায়। নামায দ্বীনেরও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ রুকন। কুরআন মাজীদে সবচে’ বেশি হুকুম নামায কায়েমেরই দেওয়া হয়েছে। তো সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ও সবচে’ বেশি প্রিয় এ বিধান পালনে রত থাকা অবস্থায় শিশুর কান্না শুনে তা সংক্ষেপে শেষ করার দ্বারা স্পষ্টই বোঝা যায় তিনি অন্যের আবেগ-অনুভূতির কতটা মূল্য দিতেন এবং অন্যের কষ্ট-ক্লেশের প্রতি কী গভীর লক্ষ রাখতেন। বস্তুত নিজ আমল ও সে আমলের ব্যাখ্যা প্রদান দ্বারা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন কিভাবে অন্যের আবেগ-অনুভূতি ও সুবিধা-অসুবিধার প্রতি লক্ষ রাখতে হয়। নিজ ইচ্ছাপূরণই বড় কথা নয়। এমনকি সেই ইচ্ছা যদি ইবাদত-সংক্রান্ত হয়, সে ক্ষেত্রেও অন্যের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি লক্ষ রাখাও জরুরি। কোনও মানুষই একা এক ব্যক্তি মাত্র নয়। কোনও না কোনওভাবে অন্যের সংগে তার সংশ্লিষ্টতা থাকেই। যখন ঘরে থাকে, পরিবারের লোকজনের সংগে সংশ্লিষ্ট থাকে। যখন বাইরে যায়, সেখানে থাকে আরও বিস্তৃত পরিম-লের সাথে সম্পৃক্ততা। একদম একা সে কোনও অবস্থায়ই থাকে না। একদম একা যখন সে নয়, তখন নিজ ইচ্ছা-অনিচ্ছাকেও একান্তই তার একার বিষয় ভাবার সুযোগ নেই। সেরকম ভাবতে গেলে দেখা দেয় নানা বিপত্তি। পারিবারিক ও সামাজিক সব ক্ষেত্রেই মানুষ ব্যাপকভাবেই এরকম বিপত্তিতে আক্রান্ত। অধিকাংশ লোক নিজ ইচ্ছাকে একান্তই নিজের বিষয় হিসেবে দেখছে। যখনই তার মনে কোনও ইচ্ছা জাগে তা পূরণে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। পরিপার্শ্ব নজরে রাখে না। চিন্তা করে না তার ইচ্ছাপূরণের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না। তার হয়তো ইচ্ছা পূরণ হয়ে যাবে। তাতে সে আরাম পাবে। ইচ্ছাপূরণজনিত তৃপ্তি বোধ হবে। এর পাশাপাশি যাদের সংগে সে কোনও না কোনওভাবে সম্পৃক্ত, তাদের যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভোগ করতে হবে, তাতে তাদের জান-মালেরও ক্ষয়-ক্ষতির আশংকা রয়েছে, অন্ততপক্ষে মানসিক কষ্ট স্বীকার করতে হবে তা ভাবার কোনও প্রয়োজনই বোধ করছে না। এভাবে প্রত্যেক সক্ষম ও সামর্থ্যবান ব্যক্তির দ্বারা সংশ্লিষ্টজনেরা সমানে তার ইচ্ছাপূরণের নির্যাতন ভোগ করছে। ঘরে-বাইরে এর দৃষ্টান্তের কোনও অভাব নেই। ঘরে স্বামীর ইচ্ছা- পাঁচজন মেহমান খাওয়াবে। ইচ্ছা যখন জেগেছে তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। সুতরাং সে তাদের দাওয়াত করে ফেলল। তাদের যাতে পরিতৃপ্তি হয় এবং নিজেরও সম্মান রক্ষা হয়, সেই বিবেচনায় বাজার করে আনল। খুব ভালো কথা। মেহমান খাওয়ানো প্রশংসনীয় কাজ। সহীহ নিয়তের সংগে করলে এর ছওয়াবও অনেক। কিন্তু বিষয়টা যেহেতু তার ও মেহমানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর আয়োজন ও বন্দোবস্তে ঘরের অন্যান্য লোকেরও সংশ্লিষ্টতা আছে, তাদের মানসিক ও কায়িক পরিশ্রমের ব্যাপার আছে, তখন তার উচিত ছিল ইচ্ছাপূরণে নেমে পড়ার আগে তাদের মতামত জানতে চাওয়া। কিন্তু সে তা জানতে চায়নি। সরাসরি ইচ্ছাপূরণের দায়ভাগ তাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। সাক্ষাৎ নির্যাতন। পারিবারিকভাবে এরকম সাধ জাগে স্ত্রীর, সাধ জাগে ছেলের এবং সাধ জাগে মেয়ের। সাধের আছে নানা রকমফের। প্রত্যেকে আপন-আপন সাধ আপনিই পূরণ করতে যায় বা পূরণ করতে চায়। অন্যকে জিজ্ঞেস করার গরজ বোধ করে না। তা পূরণে করতে হয় অর্থব্যয়। হয়তো সেই বাড়তি অর্থব্যয়ের বাড়তি চাপ খামোখাই অন্যকে পোহাতে হয়। অথবা সেই ইচ্ছাপূরণে সৃষ্টি হয় কোলাহলের, যে কোলাহলে মাতোয়ারা হওয়ার জন্যে অন্যরা প্রস্তুত ছিল না। তা প্রস্তুত নাই বা থাকুক, একজনের উটকো ইচ্ছাপূরণের মাশুলে মাথাব্যাথা ভোগ তাদের করতেই হবে। কিংবা সেই সাধ পূরণে প্রয়োজন অতিরিক্ত সময়ব্যয়ের। হয়তো সেই সময়ের একটা ভাগাভাগি অন্যদের সংগে ছিল। কিন্তু আপন মনের সাধ মেটাতে গিয়ে সেই ভাগাভাগির কোনও তোয়াক্কা সে করল না। তার তো সাধ মিটল। অন্যদের সময় বৃথা গেল। কারণ তার অভাবে যৌথ বা সামষ্টিক কাজ অন্যদের পক্ষে করা সম্ভব হল না। সেই না হওয়ার কষ্টে তারা একশা। পারিবারিক জীবনে একের ইচ্ছা পূরণে অন্যদের নানামাত্রিক অপূরণের দৃষ্টান্ত আরও অনেক দেওয়া যায়। কিন্তু দৃষ্টান্তের সংখ্যাবৃদ্ধির কোনও ফায়দা নেই। আসল কথা হচ্ছে এতটুকু বিষয় বুঝে নেওয়া যে, অন্যের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় না রেখে কেবলই নিজ ইচ্ছার ভেতর বুঁদ হওয়া সুস্থ মানসিকতার পরিচায়ক নয়। অন্যের স্বার্থের তোয়াক্কা না করে আপন ইচ্ছা পূরণে ব্যাপৃত হওয়া শুধু পারিবারিক শান্তিই বিঘ্নিত করে না, এতে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষার মর্যাদাও ক্ষুণ্ন হয়। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষা তো এটাই যে, নিজ ইচ্ছাপূরণের ক্ষেত্রে অন্যের সুবিধা-অসুবিধার মর্যাদা দাও। তা পার্থিব ইচ্ছাপূরণের বেলাতেই নয়, এমনকি ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রেও। তিনি তো শ্রেষ্ঠতম ইবাদত নামাযকেই দৃষ্টান্ত বানিয়েছেন। পরিবারের কর্তা বা কর্ত্রী দীর্ঘ সময়ব্যাপী নফল নামায পড়ছেন বা কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করছেন কিংবা অন্য কোনও যিকরে রত আছেন। খুব ভালো কথা। ঘরকে কবর বানানো উচিত নয়। মু’মিন ব্যক্তি নফল ইবাদত-বন্দেগীর নূরে নিজ ঘরকে প্রাণবন্ত করেই রাখবে। কিন্তু সময়টা যদি হয় দীর্ঘ, তবে পাশাপাশি অন্যদের দিকে লক্ষ রাখাও কর্তব্য। অন্যের কোনও কাজে ব্যাঘাত ঘটছে না তো? অন্যের কোনও রকম সহযোগিতার প্রয়োজন আছে কি? সম্মিলিত কোনও জরুরি কাজ পড়ে নেই তো? আমার কারণে অন্য কেউ কোনওভাবে আটকে রয়নি তো? ইত্যাদি। পারিবারিক বৃত্তের বাইরেও আপন ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে অন্যের ব্যাঘাত ঘটানো হয়ে থাকে নানাভাবে। এক ছাত্র অন্য ছাত্রের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটায়। কিছু ছাত্র সম্মিলিতভাবে তাদের ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে গোটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পরিবেশ ধ্বংস করে। মহল্লার কিছু তরুণের ইচ্ছা জেগেছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের। এই নিয়ে তাদের উৎপাতে গোটা মহল্লার নাভিঃশ্বাস ওঠে। কারও বাড়িতে বিবাহানুষ্ঠান। সেই বাড়ির যুবক-যুবতীদের ইচ্ছা অনুষ্ঠানটিকে আনন্দে উন্মাতাল করে তোলার। উন্মত্ত তারা ঠিকই হয়, কিন্তু সেই আনন্দ কত লোকের পক্ষে কত রকম অত্যাচারের কারণ হয় তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। এর খুব তাজা দৃষ্টান্ত গোপীবাগ আর. কে. মিশন রোডের ফ্লাট-বাসিন্দা নাজিমুল হকের মর্মান্তিক মৃত্যু। সেখানে এক কমিউনিটি হলে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। মুসলমানদের বিবাহে ‘গায়ে হলুদ’ অনুষ্ঠান কতটা শরী‘আতসম্মত, আয়োজকগণ সে বিবেচনা তো করেনইনি, উপরন্তু অনুষ্ঠানটিকে আনন্দ-উল্লাসে মাতোয়ারা করে তোলার ইচ্ছায় সঙ্গীতেরও ব্যবস্থা রাখেন। এ জাতীয় অনুষ্ঠানে কত উচ্চস্বরে গান বাজানো হয় কারও অজানা নয়। বরং কে কত উচ্চস্বরে বাজাতে পারে সর্বত্র যেন তারই প্রতিযোগিতা চলে। এখানেও তাই হয়েছিল। এত জোরে গান বাজানো হচ্ছিল যে, ফ্লাটের জানালা ও মেঝে কাঁপছিল। এ ফ্লাটের বাসিন্দা নাজিমুল হক হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। সেই উচ্চ আওয়াজের অত্যাচারে তিনি অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে তার পুত্র নাসিমুল হক কিছুটা আপত্তি জানিয়েছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিবাহবাড়ির লোকজন নাসিমুল হকের উপর চড়াও হয়। অসুস্থ পিতা নাজিমুল হক ঠেকাতে গেলে তারা তাকেও মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে পড়ে যান। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। (দৈনিক প্রথম আলো ২০-০১-২০১৮) লাগামহীন ইচ্ছাপূরণের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ আঘাতে এভাবে যে কত মানুষ আকস্মিকভাবে বা ধুঁকে ধুঁকে মারা যায়, কে তার হিসাব রাখে? উচ্চ আওয়াজে গান ও বাদ্যযন্ত্র বাজানোর ইচ্ছা আজকালকার তরুণ-তরুণীরা নানা উপলক্ষেই পূরণ করে থাকে, যেমন জন্মবার্ষিকী ও বিবাহবার্ষিকী পালন, ঈদ উদ্যাপন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দিবসপালন প্রভৃতি। এসব দিবসে যে উচ্চগ্রামে ঢোল-বাদ্য বাজানো হয়ে থাকে, শান্তিকামী মানুষের পক্ষে তাকে অত্যাচার বললে বোধ হয় কমই বলা হবে। নিরীহ জনগণ সে অত্যাচার সহ্য করতে বাধ্য। কারণ যারা এসব করে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পরিণাম কী হয়, গোপীবাগের আর. কে. মিশন রোডে তা চাক্ষুস করা গেছে। যার যত ক্ষমতা তার ইচ্ছাপূরণের বিপত্তিও তত বেশি। ক্ষমতাধরেরা তাদের ইচ্ছা পূরণ করে নানামাত্রায়। অর্থবল, লোকবল সব তাদের হাতের মুঠোয়। যখন যে ইচ্ছা জাগে, অমনি তা পূরণের ব্যবস্থা নেয়। সেজন্য অর্থ খরচ করে ও লোকবল ব্যবহার করে। যদি থাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা, তাও অসংকোচে ব্যবহৃত হয়। সংকোচ ও লাজ-লজ্জার বালাই না রেখে কোন্ ইচ্ছা তারা পূরণ না করছে? তার দায় ও খেসারত বহনের জন্যে নিরীহ জনগণ তো আছেই। হ্যাঁ, নিরীহ জনগণ তাদের ইচ্ছাপূরণের খেসারত দিচ্ছে জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি স্বীকার করে, যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটক থেকে, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা শিকেয় তুলে, ভ্যাট-করের ক্রমবর্ধমান অংকের ভার মাথায় নিয়ে, নানারকম দূষণের কবলে পড়ে শরীর-মনকে জরাজীর্ণ করে এবং আরও কত মাত্রায়। বললে হয়তো অত্যুক্তি হবে না যে, আমজনতার যত দুঃখ-কষ্ট তার সিংহভাগই সরকারি-বেসরকারি ক্ষমতাধরদের ইচ্ছাপূরণেরই খেসারত। যতদিন না তাদের ইচ্ছাপূরণের প্রতিযোগিতা প্রশমিত হবে, সাধারণ জনগণের ততদিন এ খেসারত দিয়েই যেতে হবে। আল্লাহর ভয় যাদের নেই, কিংবা বলি মসজিদ-মাদরাসা, দা‘ওয়াত-খানকাহ প্রভৃতি দ্বীনী পরিম-ল ও কর্মতৎপরতার সাথে যাদের সংশ্লিষ্টতা নেই, তাদের ইচ্ছাপূরণের দৌড়ঝাঁপ যে লাগামহীন হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দ্বীনের লেবেল যেখানে আছে, সেখানে যদি একের ইচ্ছাপূরণ অন্যের পক্ষে অত্যাচারে রূপ নেয়, নিঃসন্দেহে তা অতি বড় আক্ষেপের বিষয়। যে হাদীস সামনে রেখে আমরা আলোচনা শুরু করেছি তা যখন নামাযের মত মহান ইবাদতেও আপন ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করার সবক দেয়, তখন অন্যসব দ্বীনী ক্ষেত্রেও যে ইচ্ছার প্রয়োগে সাবধানী হতে হবে তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু সেই সাবধানতা যে যথেষ্ট অবলম্বন করা হচ্ছে, তা কি শক্ত করে বলা যাবে? ইচ্ছা হল একটা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করব। অমনি নেমে পড়লাম। মনে চাইল একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করি। ব্যস কাজ শুরু করে দিলাম। চিন্তা করলাম না এখানে মসজিদ বা মাদরাসার আদৌ প্রয়োজন আছে কি নেই। আগে থেকেই যে মসজিদ ও মাদরাসা এখানে আছে, তা দ্বারা প্রয়োজন পূরণ হচ্ছে কি না? তার পাশেই নতুন একটি প্রতিষ্ঠান চালু করলে পুরনোটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না? কিংবা একটির বর্তমানে বিনা প্রয়োজনে আরেকটির প্রতিষ্ঠা এলাকার মানুষের ভেতর বিভক্তি সৃষ্টির কারণ হবে কি না? মোটকথা কোনওকিছুই ভাবা হয় না। ইচ্ছা যেহেতু জেগেছে পূরণ তা করতেই হবে। দেখা গেছে কোনও মাদরাসায় কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা হয়েছে দাওরায়ে হাদীস খুলতে হবে। অমনি খুলে দিল। এর জন্যে ছাত্র, উস্তায, কিতাব এবং অবকাঠামোগত কোনও প্রস্তুতি নেই। উল্টো খুলে দেওয়ার পর এতদিন যেসব জামাত মোটামুটি চলছিল, তার উপরও মন্দ আছর পড়ল। তো এই ইচ্ছাপূরণ দ্বারা সার্বিকভাবে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি ছাড়া লাভ কী হল? তা লাভ কিছু নাই হোক, ইচ্ছা তো পূরণ হল! এরূপ শখের ইচ্ছা পূরণের বাসনায় অনেকে কলম নিয়ে বসে যায়। বই লেখার সাধ জেগেছে, কিন্তু তার জন্যে প্রয়োজনীয় পড়াশোনা নেই। না আছে বিষয়বস্তু সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা, না ভাষায় দখল। ব্যস একটা কিছু লিখে বাজারে ছেড়ে দেয়। বাজারে এ জাতীয় বই বিস্তর পাওয়া যায়। কোনও কোনও বই রীতিমত বিভ্রান্তিকর। ইচ্ছাপূরণের তাগিদে এমন বই-ই লিখে বাজারে ছেড়ে দিয়েছে, যা পড়ে মানুষের উপকার তো কিছু হয়ইনি; উল্টো জানা বিষয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে, মানুষের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে এবং দ্বীনের মধ্যে জন্ম নিয়েছে নতুন ফিতনা। দ্বীনকেন্দ্রিক ইচ্ছাপূরণের আছে বহুমুখী কসরত। একজন দ্বীনদার এবং দ্বীনের একনিষ্ঠ সেবক তো আমরা নিজেকে মনে করিই। সেই সুবাদে নানারকম কাজের ইচ্ছা জাগে। কখনও তাবলীগ জামাতে যেতে ইচ্ছা হয়, কখনও পীর সাহেবের খানকায় বসতে মনে চায়, কখনও ওয়াজ-নসীহত করার তাগাদা বোধ হয়, কখনও ইসলামী দল গঠনের সাধ জাগে, কখনও বা আঘাত হেনে সবকিছু তছনছ করে দিতে অনুপ্রাণিত হই। আগপাছ চিন্তা করি না। পরিপার্শ্ব লক্ষ রাখি না। যুগ ও কালের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করি না। এমনকি নিজ যোগ্যতা ও ক্ষমতাও পরিমাপ করি না। ইচ্ছা জেগেছে আর অন্ধের মত তা পূরণে লেগে পড়েছি। বলাই বাহুল্য এরকম হঠকারি তৎপরতা কখনও সুফল বয়ে আনে না। না অন্যের পক্ষে, না নিজের পক্ষে। অবস্থার শারয়ী দাবির প্রতি লক্ষ না করে কোনও পীর সাহেবের খানকায় বসে বা চিল্লায় গিয়ে ব্যবসা ধ্বংস করেছে ও পরিবারকে পথে বসিয়েছে, এরও নজির আছে। কাজ তো নিঃসন্দেহে ভালো। কিন্তু যে-কোনও ভালো কাজও সুচিন্তিতভাবে ও বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শে করাই বাঞ্ছনীয়। হযরত সা‘দ ইবন আবী ওয়াক্কাস রা. চাইলেন সবটা সম্পদ দান করে দেওয়ার অছিয়ত করবেন। এটা যে এক মহতী ইচ্ছা তাতে কার সন্দেহ থাকতে পারে? কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ইচ্ছা পূরণ করতে দিলেন না। তিনি বললেন, তাহলে অর্ধেকের অছিয়ত করি? তাও নিষেধ করলেন। শেষে বললেন, তিন ভাগের একভাগ? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তিন ভাগের একভাগ? তাও তো বেশিই। তবুও তিনি এটা অনুমোদন করলেন। সেইসংগে বললেন, তোমার ওয়ারিছগণ মানুষের কাছে হাত পেতে বেড়াবে, তারচে’ বরং তাদের জন্যে কিছু সম্পদ রেখে যাওয়াই শ্রেয়। এ হাদীসও শিক্ষা দেয় দ্বীনী কাজও কেবল ইচ্ছাবশেই করতে যাওয়া সমীচীন নয়। তা করতে হবে সুচিন্তিতভাবে। আল্লাহর পথে খরচ করা, খানকায় বসে আত্মশুদ্ধির সাধনায় লিপ্ত হওয়া, চিল্লায় গিয়ে দ্বীন প্রচারে আত্মনিয়োগ করা সবই উত্তম কাজ এবং অনেক বড় ছওয়াবের কাজ। কিন্তু এ ছওয়াবের কাজ পরিপার্শ্ব মাথায় রেখেই করা কর্তব্য। নয়তো ছওয়াবের পাশাপাশি অন্যের হক নষ্ট করার গুনাহও হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। এটাও অসম্ভব নয় যে, ক্ষেত্রবিশেষে ছওয়াবের চেয়ে গুনাহের পাল্লাই ভারী হবে। সুচিন্তিতভাবে না করলে দ্বীনী কাজে অবতীর্ণ হয়েও যে ছওয়াবের চেয়ে গুনাহের পাল্লা ভারী হওয়ার আশংকা থাকে, তার দৃষ্টান্ত দেওয়া যায় কোনও কোনও ওয়াজ-মাহফিলের দ্বারা। সেসব ওয়াজ-মাহফিলের আয়োজকদের ইচ্ছা দূর-দূরান্তের মানুষ দ্বীনের আলোচনা শুনতে পাক। ঘরে ঘরে মহিলাগণও বক্তার বক্তব্য শুনে উপকৃত হোক। এই সাধু উদ্দেশ্যে প্যান্ডেলের বাইরেও বহুদূর পর্যন্ত সাউন্ডবক্স বা হর্ণ লাগিয়ে দেয়। উদ্দেশ্য মহতই বটে, কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে বাইরের কতজন লোক মনোযোগ দিয়ে ওয়াজ শোনে? যদি কোথাও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক তা শোনে বলে প্রমাণিতও হয়, তবুও মাইকের উচ্চ আওয়াজে গোটা এলাকার মানুষকে অতিষ্ঠ করে তোলা, শিশু ও বৃদ্ধদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানো, অসুস্থ ব্যক্তির বিশ্রামকে ক্ষতিগ্রস্ত করা, ইবাদত-বন্দেগী ও যিক্র-আযকারে মনোযোগকে বাধাগ্রস্ত করা এবং শব্দদূষণ দ্বারা এলাকার শান্ত-স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করার বৈধতা শরী‘আত আদৌ দেয় কি? তা যে দেয় না সে কথা আয়োজকদের না বোঝার কোনও কারণ নেই। তবুও ইচ্ছাপূরণ বলতে কথা! সাধের ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে তারা এলাকার শত-শত মানুষের শান্তি নষ্ট করছে, কাজের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে ও তাদের নানাবিধ ক্ষতি সাধন করছে। যেহেতু মূল কাজটা দ্বীনী, তাই মানুষ এসব অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছে। মুখ খুলছে না এই ভয়ে যে, পাছে দ্বীনী কাজে বাধা দেওয়ার জন্যে গুনাহগার হতে হয় কিংবা তাকে দ্বীনী কাজের বিরোধী গণ্য করা হয়। সেদিক থেকে এ জাতীয় ইচ্ছাপূরণ দ্বীনের প্রতি মানুষের কোমল অনুভূতির সুযোগ গ্রহণের নামান্তর। প্রকৃতপক্ষে কোনও কাজের ইচ্ছা হওয়ামাত্র তাতে লেগে পড়া এবং পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় না রাখা একরকম মানসিক দুর্বলতা। একে ইন্দ্রিয়পরবশতাও বলা যায়। শিশুর যেমন কোনওকিছু খাওয়ার সাধ জাগে আর শত বাধা সত্ত্বেও সে তা খাবেই, তেমনি যাদের সংযমশক্তির অভাব তারাও মনের যে-কোনও ইচ্ছা পূরণ করবেই, তা পূরণ করাটা তার নিজের ও সমাজের পক্ষে যত ক্ষতিকরই হোক না। দুর্বলচিত্ত লোকের সে ক্ষতির দিকে তাকানোরই অবকাশ হয় না। হাদীসেও ইরশাদ হয়েছে- اَلْعَاجِزُ مَنْ اَتْبَعَ نَفْسَه هَوَاهَا. অক্ষম ওই ব্যক্তি, যে নিজেকে তার ইচ্ছা-অভিরুচির অনুগামী করে দেয়। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪৫৯ এ অক্ষমতা বলতে মানসিক অক্ষমতাই বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ যার নিজ ইচ্ছা-অভিরুচি দমন করার মত ক্ষমতা নেই, সে হালাল-হারাম নির্বিচারে খাবে এবং বৈধ-অবৈধ নির্বিশেষে করবে। এরূপ লোকের মনে কোনও পাপকর্ম করার খাহেশ জন্মালে এবং তা করার সুযোগ হলে করেই ছাড়ে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তারা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না প্রকাশ্য পাপের ক্ষেত্রেও। আর পাপকর্মটি যদি হয় অপ্রকাশ্য বা পরোক্ষ, সেদিকে তো তাদের নজরই যাবে না। অর্থাৎ সরাসরি যা করছে তা তো বৈধ কাজ কিংবা হতে পারে দ্বীনী কাজও, কিন্তু সেই কাজ করতে গিয়ে যেসব পারিপার্শ্বিকতা দেখা দেয় বা তার সাথে সংশ্লিষ্ট যেগুলো আঞ্জাম দেওয়া হয়, তা শরী‘আত অনুমোদন করে না। এরকম পরোক্ষ বা অপ্রকাশ্য পাপ তারা অবলীলায় করে ফেলবে। বাস্তবিকপক্ষে তাই করা হচ্ছে, যেমনটা আমরা উপরের দৃষ্টান্তসমূহে দেখছি। যার সংযমশক্তি প্রবল এবং যে ব্যক্তি পরিণামদর্শী, সে কখনও তার ইচ্ছা-অভিরুচির যথেচ্ছ ব্যবহার করবে না। তার মনে যখনই কোনও কাজের ইচ্ছা জাগবে তাতে সংযমশক্তি ব্যবহার করবে। কিছুক্ষণের জন্যে ইচ্ছাটি আটকে রেখে কাজের বৈধাবৈধ চিন্তা করবে। বৈধ বিবেচিত হলে ইচ্ছার বাঁধন খুলে দেবে ও তা বাস্তবায়িত করবে। আর যদি অবৈধ হয়, তবে ইচ্ছা দমন করবে। মনন ও মানসিকতায় শক্তি সঞ্চার হয় তাকওয়া থেকে। যার আল্লাহভীতি যত বেশি তার মানসিকশক্তি তত প্রবল। সুতরাং মানসিকশক্তি প্রবল করে তোলার জন্যে দরকার তাকওয়া ও আল্লাহভীতির চর্চা। আল্লাহভীতি এমনই এক দাওয়াই, যা মনে শক্তি যোগায়, শরীরে সজীবতা আনে ও চিন্তা-ভাবনাকে শাণিত করে। আল্লাহভীরু লোকের চিন্তা অতি দূরবিস্তৃত হয়ে থাকে। সামনের সীমিত পরিম-লে তার দৃষ্টি আটকে থাকে না। তার কাজের স্পর্শ কোথায় কোথায় লাগতে পারে সেদিকেও চোখ বুলায়। সরাসরি বৈধ হলেও পরোক্ষ কী কী অবৈধতা সে কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে পারে, তাও সে বিবেচনা করে। আপাতদৃষ্টিতে ভালো মনে হলেও কোনও গুপ্ত মন্দত্ব তার ভেতর আছে কি না খতিয়ে দেখে। এককথায় সে ইচ্ছাপূরণসর্বস্ব হয় না। সে হয় সদ্বিবেচক ও পরিণামদর্শী। মোটকথা উপরিউক্ত হাদীস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের কর্তব্য জীবনের অন্যান্য কাজেও নিজ ইচ্ছাপূরণে সাবধানী হওয়া। প্রথমত চিন্তা করতে হবে, যে কাজের ইচ্ছা হয়েছে সে কাজটি শরী‘আতসম্মত কি না। দ্বিতীয়ত ভাবতে হবে কাজের পদ্ধতি নিয়ে। কোন্ পদ্ধতিতে করলে তা দ্বারা অন্য লোক কষ্ট পাবে না বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, সেই পদ্ধতি খুঁজে নিতে হবে। যে সকল পন্থা অন্যদের পক্ষে পীড়াদায়ক তা অবশ্যই পরিহার করতে হবে, তাতে সেসব পন্থা অবলম্বনের ইচ্ছা যতই প্রবল হোক না কেন। মনে রাখতে হবে, নিজ ইচ্ছাপূরণের নাম দ্বীনদারী নয়। দ্বীনদারী বলে শরী‘আতের অনুসরণকে। অন্যকে কষ্ট দিয়ে নিজ ইচ্ছা পূরণের অনুমতি শরী‘আত দেয় না। এরকম ইচ্ছা দমন করা অবশ্যকর্তব্য। তা দমনের জন্য যে মানসিক শক্তির দরকার, তাকওয়া ও আল্লাহভীতির চর্চা দ্বারা তা সহজেই অর্জন করা সম্ভব। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের মুত্তাকী হয়ে ওঠার তাওফীক দান করুন- আমীন।
About Islamic Information, brief history of islam, islam religion facts, interesting questions about islam, islam means peace and sunnah taqririyyah
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Popular Posts
-
প্রশ্নঃ দাইউস কাকে বলে এবং দাইউস ব্যক্তির পরিণতি কি? ================================== উত্তরঃ দাইউস হলো সে ব্যক্তি যে কিনা তার পরিবার প...
-
মোনাজাত কিভাবে করতে হবে? সহিহ হাদিসের আলোকে জানাবেন।**************************উওর: মোনাজাত করার আদব হচ্ছে - ১. যেকোন সময় মোনাজাত করা য...
-
■■■ আমাদের প্রথম দায়িত্ব হল ইসলাম কে সঠিক ভাবে জানা এবং আমল করা ও দাওয়াত দেওয়া । ■■■ 💚💚💚💚💚 প্রশ্নঃ হাদীস কাকে বলে? উত্তর...
-
বডি হিটার। মানে যা শরীরকে গরম করে। উত্তাপ দেয়। উষ্ণ করে। স্ত্রীর ভূমিকা কী, বডি হিটিং, স্বামীর শরীর গরম করা? সোজাসাপটা উত্তর দিতে গে...
-
মুসলিম ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট্ 💖💖💖💖💖 ইসলাম শব্দের অর্থ হচ্ছে নিজের ইচ্ছা কে আল্লাহ্ তায়ালার আনুগত্যের উ...
-
শরিয়তের দৃষ্টিতে নারী ও পুরুষের নামাজের পার্থক্য ও লা-মাযহাবি ফিতনা। 👉নারী পুরুষের শারীরিক গঠন, সক্ষমতা, নিরাপত্তা ইত্যাদী নানা বিষয়ে য...
-
ইসলাম কে জানুন এবং ভন্ডদের থেকে দূরে থাকুন । আমাদের সকলকে ইসলাম পরিপূর্ণ জানতে হবে, এবং আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করার চেষ্টা ...
-
স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর শোকপালনে বিধান কি? স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর ইদ্দতকালীন সময় (অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত অ...
-
ইজতিহাদ, মুজতাহিদ, মাযহাব, তাকলীদ ও মুকাল্লিদ পরিচিতি। উপস্থাপনা : সাহাবায়ে কিরামের পবিত্র যামানার পর থেকে ইসলাম ও মুসলিম জাতিকে পৃথিবীর ...
-
অনেক মুসলিম যে গুনাহের মধ্যে লিপ্ত, কিন্তু গুনাহের পরিচয় পাওয়া, গুনাহ কে চিনতে পারা, সর্ব সাধারণ সকল মুসলিমদের যে বিষয় গুলি জানা থাকা ফরজ...
একটু চিন্তা করুন ।
أعوذ بالله من الشيطان الرجيم بسم الله الرحمن الرحيم সকল মুসলিম ভাই বোন ক...
Search This Blog
-
ইজতিহাদ, মুজতাহিদ, মাযহাব, তাকলীদ ও মুকাল্লিদ পরিচিতি। উপস্থাপনা : সাহাবায়ে কিরামের পবিত্র যামানার পর থেকে ইসলাম ও মুসলিম জাতিকে পৃথিবীর ...
-
প্রশ্নঃ দাইউস কাকে বলে এবং দাইউস ব্যক্তির পরিণতি কি? ================================== উত্তরঃ দাইউস হলো সে ব্যক্তি যে কিনা তার পরিবার প...
-
শরিয়তের দৃষ্টিতে নারী ও পুরুষের নামাজের পার্থক্য ও লা-মাযহাবি ফিতনা। 👉নারী পুরুষের শারীরিক গঠন, সক্ষমতা, নিরাপত্তা ইত্যাদী নানা বিষয়ে য...
No comments:
Post a Comment